আন্তর্জাতিক ডেস্কঃঃ
ভারতের মেঘালয় রাজ্যে ১০ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের হাড় পাওয়া গেছে। ভারতে এর আগে গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়ুতে ডাইনোসরের ফসিল আবিষ্কৃত হয়েছে। ভারতের গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এ খবর জানিয়েছে।
ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়, গবেষকরা মেঘালয়ের পশ্চিম খাসি পাহাড় জেলার আশেপাশের অঞ্চল থেকে ১০ কোটি বছর আগের লম্বাগলা ডাইনোসরের জীবাশ্মের টুকরোগুলো চিহ্নিত করেন। উত্তর-পূর্ব ভারতের পেলয়ন্টোলজি বিভাগের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের গবেষকরা এগুলোর খোঁজ পান।
এই প্রজাতির ডাইনোসরগুলোর ছিল খুব দীর্ঘ ঘাড়, দীর্ঘ লেজ, শরীরে অন্য অংশের তুলনায় ছোট মাথা এবং পুরু স্তম্ভের মতো পা। ডাইনোসরগোত্রীয় সে প্রাণীর মধ্যে সম্ভবত এগুলো সবচেয়ে বিশালদেহী। এগুলোকে বলা হয় টিটানোসরাস। এগুলো আফ্রিকা, এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং অ্যান্টার্কটিকার জেনেরাসহ সৌরপোড প্রজাতির একটি বিচিত্র গ্রুপ ছিল।
গবেষকরা বলেছেন, মেঘালয়, গুজরাট, মধ্য প্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং তামিলনাড়ুতে পাওয়া ফসিলগুলোর সঙ্গে আফ্রিকা, এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং অ্যান্টার্কটিকায় পাওয়া ফসিলগুলোর মিল রয়েছে।
জিএসআইয়ের প্যালিয়ন্টোলজি বিভাগের জ্যেষ্ঠ ভূতাত্ত্বিক অরিন্দম রায় বলেছেন, ‘মেঘালয় থেকে ডাইনোসরের হাড় পাওয়া যাওয়ার বিষয়ে ২০০১ সালে জিএসআইয়ের রিপোর্টে বলা হয়েছিল। তবে সেগুলো এর টেকনোমিক শনাক্তকরণটি বোঝার মতো ছিল না।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রায় ১০ কোটি মিলিয়ন বছর আগে জীবাশ্মগুলো সম্ভবত লেট ক্রিটেসিয়াসের। তবে এ নিয়ে আরো পড়াশোনা চলছে। বিস্তারিত কাজও করা হচ্ছে।’
ডাইনোসর বলতে জনপ্রিয় ধারণায় একটি অধুনা অবলুপ্ত, সাধারণত বৃহদাকার মেরুদণ্ডী প্রাণীগোষ্ঠীকে বোঝায়। এরা পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের প্রাগৈতিহাসিক অধিবাসী এবং বৈজ্ঞানিকদের অনুমান এই প্রভাবশালী প্রাণীরা প্রায় ১৬ কোটি বছর ধরে পৃথিবীতে রাজত্ব করেছে। প্রথম ডাইনোসরের বিবর্তন হয়েছিল আনুমানিক ২৩ কোটি বছর পূর্বে। ক্রিটেশিয়াস যুগের শেষে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি বছর পূর্বে একটি বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডাইনোসরদের প্রভাবকে পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করে দেয়। তাদের একটি শ্রেণীই কেবল বর্তমান যুগ পর্যন্ত টিকে থাকতে পেরেছে বলে ধারণা করা হয়: শ্রেণীবিন্যাসবিদরা ধারণা করেন আধুনিক পাখিরা থেরোপড ডাইনোসরদের সরাসরি বংশধর; জীবাশ্ম দ্বারা প্রাপ্ত নিদর্শন থেকে জুরাসিক যুগে সংঘটিত এই বিবর্তনের প্রমাণ পাওয়া যায়।
ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ডাইনোসরের প্রথম জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়। এরপর থেকে পর্বতগাত্র বা শিলায় আটকা পড়ে থাকা ডাইনোসরের কঙ্কাল পৃথিবীর বিভিন্ন জাদুঘরে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। ডাইনোসরেরা বর্তমান বিশ্ব সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হয়েছে। প্রধানত কোনো কোনো অবলুপ্ত ডাইনোসর প্রজাতির বিশাল আয়তন এবং তাদের সম্ভাব্য হিংস্র স্বভাবের দরুন তারা শিশু ও বয়স্ক সবার কাছেই বিশেষ আগ্রহের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সর্বাধিক বিক্রিত বই এবং জুরাসিক পার্ক ইত্যাদি প্রচুর কাটতি পাওয়া চলচ্চিত্রে ডাইনোসর প্রসঙ্গ এসেছে এবং এ সংক্রান্ত নতুন যে কোনো আবিষ্কার গণমাধ্যমে বিশেষভাবে সম্প্রচার করা হচ্ছে।